শহীদ জিয়ার দেশপ্রেম ও বর্তমান বিএনপি
-ড. মোঃ কামরুজ্জামান
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন সৎ, ধার্মিক ও দেশপ্রেমিক। ছিলেন ভারতের আধিপত্যবাদীশক্তি বিরোধী এক সাহসী বীর সৈনিক। দেশের উন্নয়ন ও নতুন স্বাধীনতা রক্ষায় তিনি দেশের ভালো ও দেশপ্রেমিক মানুষগুলোকে বিএনপিতে জড়ো করেছিলেন। তার সততা, ধর্মপরায়নতা ও দেশপ্রেমে আপোসহীনতার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি জনগণের মন জয় করেছিলেন। গঠনমূলক কাজের জন্য তিনি দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় অবস্থান করে নিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমানের স্কুলজীবন শুরু হয় কলকাতার একটি স্কুলে। আর ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন পাকিস্তানের করাচি একাডেমি থেকে। ম্যাট্রিক পাসের পর তিনি ভর্তি হন করাচির ‘ডি জে কলেজে’। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই তিনি চাকরি জীবনে পদার্পণ করেন। ১৯৫৩ সালে ‘পাকিস্তান সামরিক একাডেমি’তে একজন অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিরত্ব প্রদর্শন করেন। এসময় তিনি ছিলেন পাকিস্তান রণাঙ্গনের ‘ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট’-এর একটি ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার। ১৯৬৯ সালের এপ্রিলে জিয়াউর রহমান ঢাকার অদূরে জয়দেবপুর সাব-ক্যান্টনমেন্টে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নে সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে যোগদান করেন। একই বছর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি চার মাসের মেয়াদে পশ্চিম জার্মানি গমন করেন। ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম বদলি করা হয়। নিযুক্ত হন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অষ্টম ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন পাকিস্তান হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন জিয়াউর রহমান জীবন বাজি রেখে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ ও জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে জিয়াউর রহমান দেশের গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানুষের মৌলিক চাহিদার বাস্তবায়ন। কিন্তু স্বাধীনতার পর যখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা হলো, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করা হলো, তখন জিয়াউর রহমানের হাতেই বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দলবিধির অধীনে তিনি গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবর্তন করেন। আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী, জাসদ, ন্যাপ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যাত্রা শুরু হয় জিয়ার বদান্যতায়। জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই বাংলাদেশে এসব দল গণতন্ত্র চর্চার অধিকার ফিরে পেলো। সেই কারণেই জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও প্রবর্তক বলা হয়। তিনি বিশ্বের বুকে পরিচিতি পান বহুদলীয় গণতন্ত্রের মানসপুরুষ হিসেবে। বাংলাদেশ যেহেতু মুসলিম অধ্যুষিত দেশ তাই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বিবেচনা করে তিনি সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেন।
জিয়াউর রহমান সব ধর্মের, সব বর্ণের, সব মতের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বন্যা ও খরা থেকে বাঁচার জন্য এবং জমিতে সেচ প্রদানের জন্য তিনি খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। ফারাক্কার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি এন্টি ফারাক্কার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। তার সময়ে সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের খাদ্য সংকট দূর হয়েছিল। জিয়াউর রহমানের সময়ই সর্বপ্রথম এদেশ থেকে চাল রফতানি করা হয়েছিল বিদেশে। তার সময়েই বন্ধ কল-কারখানা সচল হয় এবং অফিস-আদালত ও ক্ষেত-খামারের সর্বক্ষেত্রেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। দেশের জনগণ সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ অনুভব করতে শুরু করে। দেশ গড়তে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়িয়েছেন এই মহান ব্যক্তিত্ব। নিজে হাতে খাল খনন করেছেন, গাছ লাগিয়েছেন যা একটি দেশের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। শিক্ষা বিস্তারে তার অবদান অতুলনীয়। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। এটি বিবেচনায় নিয়ে তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণ করেছেন। মেধার স্বীকৃতি, লালন ও বিকাশের জন্য তার পদক্ষেপ ছিল প্রশংসনীয়। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনকারীদের নিয়ে নৌবিহার করেছেন, তাদের সঙ্গ দিয়েছেন ও দেশের জন্য তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। পররাষ্ট্রনীতিতেও জিয়াউর রহমান সফল ছিলেন। সব বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা ছিল তার পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য। ১৯৮১ সালে তৃতীয় ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনে ৩ সদস্যবিশিষ্ট আলকুদস কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। ইরাক-ইরান যুদ্ধাবসানের উদ্দেশ্যে গঠিত নয় সদস্যবিশিষ্ট ইসলামী শান্তি মিশনে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি শুধু বাংলাদেশের নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মুসলিম বিশ্বের একজন জনপ্রিয় নেতা। তার সময়েই বাংলাদেশ ১৯৭৮ সালে জাপানের মতো শক্তিধর দেশকে পরাজিত করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদ লাভ করে। তিনি বাংলাদেশের মানুষের মহামুক্তির সনদ ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং এই ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বিএনপি গঠন করেন। দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন ছিল, তিনি সেই সময়টুকু পাননি। যারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে মেনে নিতে পারেনি তারা জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষা পোষণ করতো। এদেশ বিশ্বের মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক এটা তারা চাইতো না। এসব দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর ইশারায় কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে ঘাতকের তপ্ত বুলেট তার হৃদস্পন্দন স্তব্ধ করে দেয়। সাদামাটা প্রকৃতির মানুষ ছিলেন জিয়াউর রহমান। পোশাক-পরিচ্ছেদ ও আহারে তার কোনো বিলাসিতা ছিল না। তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দুই পুত্র, আত্মীয়স্বজনকে এদেশের মানুষ খুব একটা চিনতেন বলে মনে হয় না। তার দুই পুত্র লেখাপড়া করতো সাধারণ মানের স্কুলে। তার মৃত্যুর পর নিজস্ব সম্পদ হিসেবে তার পরিবার-পরিজনের জন্য কিছুই রেখে যেতে পারেননি। এমন কি তার পরিবারের মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই ছিল না। তাই তৎকালীন সরকার মানবিক কারণে ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের একটি বাসভবন বেগম খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এই বরাদ্দ কোনোদিন মেনে নিতে পারেনি। ঈর্ষান্বিত হয়ে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেটিও কেড়ে নেয় ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বরে। বেগম জিয়া ছিলেন শহীদ জিয়ার সহধর্মিনী ও যোগ্য উত্তরসূরী। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকেন। শহীদ জিয়ার রেখে যাওয়া আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে থাকেন বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত সফলভাবে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এক সাজানো মিথ্যা মামলায় তাকে কারারুদ্ধ করে। প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর্যন্ত তিনি কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। কারাগারে থাকাকালীন সময়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান তারেক রহমান। তারেক রহমান এখনও পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু শহীদ জিয়া আর খালেদা জিয়ার সেই বিএনপি এখন আদর্শিকভাবে ম্রিয়মাণ। জিয়া এবং খালেদা জিয়ার আদর্শের কোনো ছিটেফোঁটা এখন আর অবশিষ্ট নেই এই বিএনপিতে। ভারতীয় আধিপত্যবাদীবিরোধী সেই বলিষ্ঠ দলটি এখন ভারতের পকেট পার্টিতে পরিণত হয়েছে।
সাকা চৌধুরীর মতো একটা পরিবারের কোনো ভূমিকা এই বিএনপিতে এখন আর নেই। ঐ পরিবারের কোনো সদস্যের কোনো গুরুত্বও নেই বিএনপিতে। সাকা চৌধুরীকে অন্যায়ভাবে আওয়ামী লীগ ফাঁসি দিলেও বিএনপির ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। অথচ তার পরিবারের মত একটা খান্দানী পরিবার বাংলাদেশ তো বটেই গোটা উপমহাদেশে খুঁজে পাওয়া বিরল। এমকে আনোয়ারের মতো একজন আমলা বিএনপিতে এখন অনুপস্থিত। সাইফুর রহমানের মতো একজন তুখোড় অর্থনীতিবিদও এ দলে এখন স্বপ্নের মতো। মাহমুদুর রহমান, এহসানুল হক মিলন, কায়কোবাদ ও বাবরদের ছাড়া বিএনপিকে কল্পনা করা যেতো না। এসব নেতা যুক্ত হয়ে বিএনপিকে দুর্বার শক্তিতে পরিণত করেছিল। বেঁচে থাকা বাবর, মিলন আর মাহমুদুর রহমানরা বিএনপিতে এখন একেবারেই গুরুত্বহীন! পিনাকী ভট্টাচার্য, কনক সরোয়ার ও ইলিয়াসের মতো এক্টিভিস্টরা বিগত সতের বছর যাবত বিএনপিকে ফুয়েল যুগিয়েছে। তাদের ফুয়েল পেয়েই নিঃশ্বাস নিয়ে কোনোমতে বেঁচে ছিল বিএনপি। তারা বিএনপির হয়ে নিঃস্বার্থে কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। এসব এক্টিভিস্ট বিএনপিতে এখন উপেক্ষিত- অপাঙ্ক্তেয় শুধু নয়, রীতিমতো ঘৃণার পাত্র। তারা এখন বিএনপির চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন। কারণ একটাই, বিএনপির চাঁদাবাজি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে কথা বলা।
বাস্তবতা হলো, কালের গর্ভে আসল বিএনপি এখন একেবারেই হারিয়ে গেছে। শহীদ জিয়ার বিএনপি শেষ হয়েছে অনেক আগেই, এমনকি বেগম জিয়ার বিএনপিও এখন আর নেই। বর্তমানে বিএনপিতে তারেক রহমানের নেতৃত্ব কতটুকু রয়েছে, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
ইতিহাসে পড়েছি, যেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় সাভারে একটা প্লটের টাকা দিতে পারেননি, সেই বিএনপির ফুটপাতের একটা কর্মী এখন কোটি টাকার মালিক। সৎ বিএনপি এখন হয়েছে চাঁদাবাজ। ধর্মপরায়ণ বিএনপি হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ ও ধর্মবিরোধী। ভারতবিরোধী বিএনপি হয়েছে এখন ভারতের গোলাম।
সাকা চৌধুরী, এমকে আনোয়ারের পরিবর্তে এখন দলে নেতৃত্ব দিচ্ছে দুদু, টুকু, ভুলু, সালাউদ্দিন, খসরু, রুমিন, ফখরুলের মত পদলোভী ও স্বার্থবাদী লোকেরা।
গত ১৭ বছর যারা মাঠে নামতে পারেনি। আওয়ামীশূন্য ফাঁকা মাঠে তাদের বীরত্ব এখন হাস্যকর ও লজ্জাকর । দেশবাসী তাদের বকবকানিতে এখন অতিষ্ঠ।
এলাকার সব ফটকাবাজ ও ফালতু পোলাপান যারা আগে সারাদিন আওয়ামী লীগের টেন্টে বসে মোবাইল টিপতো, সিগারেট টানতো, দিনশেষে পেতো একশ টাকা। তারাই এখন বিএনপির কিশোরগ্যাঙ হয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। তারা বিএনপির দলকে ভারি করে এখন চাঁদা আদায়ে ব্যস্ত। চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও দলীয় কোন্দলে এ পর্যন্ত বিএনপির দলে নিহতের সংখ্যা একশর বেশি! দিন যতো যাচ্ছে ও যাবে দলে নিহতের সংখ্যা ততো বাড়ছে, বাড়বে। এমন একটি দলে কোনো দলীয় নিয়ন্ত্রণ নেই।
ওদিকে বিএনপিতে এখন চলছে রাজনীতির নানান লেভেলের খেলা। এই লেখা যখন প্রস্তুত করছি ঠিক তখনি ড. ইউনুস স্যার লন্ডনে পৌঁছেছেন। ১৩ জুন তারেক রহমানের সাথে তার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
লন্ডনে তারেক রহমান যাতে ডঃ ইউনুসের সাথে দেখা করতে না পারেন সেজন্য বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের কলকাঠি নাড়া হচ্ছে। কারণ, তারেক রহমান যদি ডঃ ইউনুসের সাথে দেখা করেন তাহলে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশে কোনো রাজনীতি থাকবে না। এই দুই নেতার মাঝে যদি ভালো সম্পর্ক তৈরি হয় তাহলে ডঃ ইউনুসকে কোনো প্রকার চাপের মধ্যে রাখা যাবে না।
এতে দেশে ফ্যাসিস্টদের বিচার দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলবে। উপমহাদেশের রাজনীতিতে ইউনূস হবেন রাজনীতির পরিচালক। আঞ্চলিক রাজনীতির মহানায়ক বনে যাবেন ড. ইউনুস। যা দুলু, ভুলুর বিএনপি, আওয়ামী লীগ আর ভারত চায় না। দেশের পরিবেশ যদি স্থিতিশীল এবং সুষ্ঠ অবস্থা বিরাজ করে, তবে দেশের অর্থনীতি সত্যিই ঘুরে দাঁড়াবে এবং বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে। আর এটাও উল্লেখিত গোষ্ঠীটি চায় না।
বাংলাদেশ যদি অর্থনৈতিকভাবে সফল এবং সাবলম্বী হয় তাহলে দাদাদের পক্ষে আর বাংলাদেশকে আমের আঁটির মত চোষা সম্ভব হবে না। এজন্যই বিএনপির ভারতীয় গ্রুপটি লন্ডনে ইউনুসের সাথে তারেকের মিটিংটি বানচালের সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে
আর একটি বিষয় হলো, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যদি কোনো ফালতু রাজনীতি না থাকে তাহলে তো অনেক নেতার ভিউ থাকবে না। দুদু আর বুলু ভাইয়েরা যদি ভাইরাল না হয় তবে অনেকেই হয়তো ননোমিনেশনও পাবেন না।
এজন্যই বিএনপি’র ওই গ্রুপটি দেশের ঘোলা পানি কখনো পরিস্কার হতে দেবে না। উল্টো পরিস্কার পানিতে নানান ময়লা মিশিয়ে বর্জ্যে পরিণত করবে।
কুত্তা আর বিড়ালের পেটে নাকি ঘী সহ্য হয়না। ঠিক তেমনি বাঙালিদের সুষ্ঠ রাজনৈতিক পরিবেশ ভালো লাগে না, গেঞ্জাম পাকিয়েই ওরা মজা পায়।
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
আপনার মতামত লিখুন :